লালমনিরহাটে তিস্তা নদীতে উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে একদিনেই বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে এ পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়।
সকাল থেকেই বিপৎসীমা ছুই ছুই থাকলেও বিকেল তিনটায় বিপৎসীমার ১০ সে.মি. ওপরে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়। এভাবে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকলে আগামী ২৪ ঘন্টায় ভয়াবহ বন্যার পূর্বাভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
গতকাল রবিবার বিপৎসীমার ২২ সে.মি. নিচে পানি প্রবাহিত হলেও আজ সোমবার সকাল ছয়টা, নয়টা ও দুপুর বারোটায় বিপৎসীমার ২ সে.মি. নিচে ও বিকেল তিনটায় ১০ সে. মি. ওপরে রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে ভাটি এলাকায় ধীরে ধীরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় নিজেদের সবটুকু গুছিয়ে নিচ্ছেন নদী পারের মানুষ।
এই বছরে চতুর্থ দফা বন্যায় জেলার পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী,দোয়ানী,ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া,হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি,আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,কালমাটি,পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ,কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি,রাজপুর,গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়াও ভাটি এলাকায় রাত নাগাদ পানির প্রবাহ চলে আসবে। ফলে নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে তাদের। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আগামী ২৪ ঘন্টায় তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করা এবং লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে বলে জানানো হয়েছে। লালমনিরহাট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আগামী ২৪ ঘন্টায় পানি আরও বাড়তে পারে। আমরা জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে।